যারা পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিতে না দেওয়ার জন্যে গুন্ডামি হচ্ছে বলে চেঁচামেচি করছে তারা বুঝছে না এর মাধ্যমে কত পয়সা বাঁচছে। একটা এতবড় নির্বাচন করতে কত খরচা হয় বোঝেন? বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেশিরভাগ আসনে নির্বাচন হয়ে গেলে কত টাকা বেঁচে যাবে সে খেয়াল আছে? চৌত্রিশ বছরে বামফ্রন্ট তো কোষাগার খালি করে রেখে গেছিল। তা সত্ত্বেও বাংলায় যে উন্নয়নের জোয়ার এসেছে এরা কি সেটা দেখতে পাচ্ছে না?
ক্লাবগুলো সব ঝিনচ্যাক নীল সাদা হয়েছে, রাস্তায় এত আলো যে পাখিরা রাতে দিন ভেবে কলকাকলিতে ভরিয়ে দিচ্ছে, ভি আই পি রোড, যশোর রোড সব কালীঘাট মন্দিরের চাতালের মত চওড়া হয়ে গেছে, গাছফাছ উড়িয়ে দিয়ে রেলিং বসিয়ে লন্ডন না হোক, কলকাতাকে হনলুলুর মত তো দেখাচ্ছেই। নইলে বিদেশ কিম্বা ব্যাঙ্গালোর থেকে অনেকবছর পর এসে বিশ্ব বাঙালিরা আনন্দে কেঁদে ফেলছে কি এমনি এমনি? গ্রামে লোকজন চৌত্রিশ বছর ধরে খেতে পেত না, পরতে পেত না, পড়তেও পেত না। কারণ স্কুল কলেজ কিছু ছিলই না। এখন ইস্কুলে ইস্কুলে ছয়লাপ। সেসব সহ্য হচ্ছে না বলে হিংসুটে সিপিএম কাগজগুলোর সাথে হাত মিলিয়ে রটাচ্ছে যে সরকারী ইস্কুলগুলো নাকি উঠে যাচ্ছে। তা সে রটাক। নিন্দুকের রাবণের মত দশটা মাথা হয়। কিন্তু এটা তো বুঝতে হবে এত উন্নয়ন করতে টাকা লাগে। সে টাকা কি আকাশ থেকে পড়বে? বছর বছর ভোটও হবে আবার উন্নয়নও হবে? এ যে খেতে পেলে শুতে চাওয়া দেখছি।
আর ভোট দিতে গেলেই বা দিতেন কাকে? লালেদের তো আর দিতেন না এই বাজারে। আর আছেটা কে? জয় শ্রীরাম পার্টি? আরে জয় শ্রীরাম তো তরোয়াল হাতে নিয়ে যারা মনোনয়ন জমা দেয়া আটকাচ্ছে তারাও বলছে। তবে আর তফাত কী? তাহলে দাঁড়াল কী? দাঁড়াল এই যে ভোট হলেও যাকে দিতেন ভোট না হলেও সে-ই জিতবে। তাহলে আবার অসুবিধেটা কী? খামোকা এক কাঁড়ি টাকা খরচা করার থেকে এইটেই ভাল না? ভাত, ডাল আর ডিমের ঝোলের উপর দিয়ে মিটে যাবে।
কী বললেন? হিংসা? রক্তপাত? ধুর মশাই! ও তো বাম আমল থেকে চলে আসছে। এতটা দ্যাখেননি বলছেন? ওসব চক্রান্ত। চুপিচুপি করেছে, ক্যামেরায় উঠতে দেয়নি। এখনকার সরকার অনেক খোলামেলা, গণতান্ত্রিক। তাই সব দেখতে পাচ্ছেন আর ভয় পাচ্ছেন। এই যে ভয় পাওয়ার স্বাধীনতা — এইটাই তো আগে ছিল না। এটাই তো সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। তাছাড়া হিংসা হচ্ছে হিংসা। পাঁচ কোটি চুরি কল্লেই চুরি আর পাঁচ টাকা চুরি কল্লে চুরি না? যত্তসব মাওবাদীর দল! সিপিএম এর ম, মাও এর ও আর বিজেপির পি র কা মিলে হল মওকা। এরা ভেবেছে এই মওকা ক্ষমতা দখল করে উন্নয়নের গতি স্তব্ধ করে দেয়ার। সে গুড়ে বালি। উন্নয়ন চলছে, চলবে।
বিঃ দ্রঃ বিজেপিতে কা নেই সেটা আমরা জানি। বাম বুদ্ধিজীবীদের ভাষার উপর প্রভুত্ব করার স্বভাবটা আর গেল না। ভাষাটা এখন আর রবীন্দ্র সদনের আঁতেলদের নয়, ওটা এখন সবার। অতএব আমরা যখন বলেছি কা আছে তখন আছে। ও নিয়ে দাঁড়কাকের মত কা কা করবেন না বলে দিচ্ছি।