মাত্র আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে ব্যাপারটা দাঁড়িয়ে গেল জোয়ান বনাম বুড়োতে। এরকমই একটা কিছু আশঙ্কা করছিলাম। কেন? সে কথায় পরে আসছি। আগে মেট্রো, বাস, ট্রেনে আমার গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতার কিছুটা বলি। তাতে এই “বুড়ো মানেই বদ” স্টিরিওটাইপটার অন্তঃসারশূন্যতা কিছুটা বোঝা যাবে।
আমার মেয়ের বয়স ছয়। যখন একেবারে কোলের শিশু ছিল, তখন বেশ কয়েকবার মেট্রোয় উঠে ভিড়ের মধ্যে আমার স্ত্রী লেডিস সিটের সামনে দাঁড়িয়েছে। সেখানে বসা জেন ওয়াইয়ের সদস্যারা নিজেদের মোবাইল স্ক্রিনে ব্যস্ত থেকেছে বা হেড ফোনে সুরের জগতে মগ্ন থেকেছে। উঠে দাঁড়িয়ে বা পাশের জনকে সরে বসতে বলে আমার বউকে বসার জায়গা করে দিয়েছেন পাকা বা কাঁচাপাকা চুলের মহিলারা, অনেক সময় পুরুষরা। কেউ বলতেই পারেন যে এ থেকে প্রমাণ হয় না বুড়োবুড়িরা রক্ষণশীল নয়, moral policing করে না। ঠিক। কিন্তু এ থেকে এটা প্রমাণ হয় যে বয়স্কদের মধ্যে রক্ষণশীলতা যদি থেকে থাকে, তরুণদের মধ্যে আছে নিদারুণ হৃদয়হীনতা। সেটাও ঘটনাবিশেষে নিগ্রহ হয়ে উঠতে পারে এবং ওঠেও।
এটাকেও স্টিরিওটাইপ বলবেন তো? একদম ঠিক। এবং স্টিরিওটাইপ মাত্রেই ভুল। বয়স্ক মানুষ মাত্রেই সেদিনের মেট্রোর লোকগুলোর মত নয়, অল্পবয়সী মাত্রেই হৃদয়হীন নয়। তবু আরো দুটো ঘটনা শুনে নিন।
বছর পাঁচেক আগে বাসে করে অফিস যাচ্ছি। আমি শুরুর দিকের স্টপেজ থেকে উঠি বলে বসার জায়গা পেয়েছি কিন্তু কিছু পরেই বাসটায় ঠাসাঠাসি ভিড় হয়ে গেল। লক্ষ্য করলাম প্রায় আমারই বয়সী একটি মেয়ে ঐ ভিড়ের মধ্যে বিশাল একটা ব্যাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে লোকের অভিশাপ এবং গুঁতো হজম করছে। ব্যাগটা নিতে চাইলাম, দিতে রাজি না হওয়ায় আন্দাজ করলাম মূল্যবান কিছু আছে। তখন আমার আসনটাই ছেড়ে দিলাম, মেয়েটি বসল। এটা বলার মত ঘটনা নয়। বলতে হচ্ছে আমি উঠে দাঁড়াতেই আমার সমবয়স্ক পুরুষ সহযাত্রীর প্রতিক্রিয়াটার জন্যে। বাঁকা হেসে সে আমায় বলল “বা দাদা, মেয়েছেলে বলে বসতে দিলেন? একটুআধটু আমাদেরও তো দিলে পারেন।” প্রথমে ইঙ্গিতটা বুঝিনি। বুঝতে পেরে বললাম “হ্যাঁ মেয়ে বলেই বসতে দিলাম। আপনি মেয়ে হয়ে আসুন, আপনাকেও বসতে দেব।” ছেলেটি এরপর আর কথা বাড়ায়নি। কিন্তু কয়েক মিনিট পরে দেখি ছেলেটি আর মেয়েটি অল্পস্বল্প কথা বলছে। কিছুক্ষণ যাওয়ার পর বোঝা গেল ওরা সহকর্মী। এই হচ্ছে আমাদের প্রজন্ম, এই তার মহিলা সহকর্মীর প্রতি শ্রদ্ধা, এই আমাদের প্রগতিশীলতা।
দ্বিতীয় ঘটনা মাসখানেক আগের। বলতে লজ্জা হয়, আমার জন্মস্থান, আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা নবগ্রামে স্টেশন রোডের উপর ঘটেছে ঘটনাটা। বাড়ি ফেরার পথে সাইকেল নিতে গেছি ভর সন্ধ্যেবেলা। রাস্তা তখন জমজমাট। দেখি দোকানের সামনে আমার বয়সী একটি ছেলে তার সঙ্গের মহিলাকে কুৎসিত ভাষায় ধমকাচ্ছে। অনেকেই তাকিয়ে আছে, কেউ কিছু বলছে না। মেয়েটি, সম্ভবত ভয়ে, কাকুতিমিনতি করছে বাড়ি যাওয়ার জন্যে। একটু দেখে মনে হল ছেলেটি মত্ত। তাকে ধমকাব ভাবছি, এমন সময়ে ঠাস করে মেয়েটির গালে এক চড় কষিয়ে দিল। দ্বিতীয় চড় কষানোর আগেই তার হাতটা ধরে ফেলেছি এবং ধমকে বলেছি এটা ভদ্রলোকের জায়গা। এখানে এসব চলবে না। ছেলেটি অনেকক্ষণ ধরে টলতে টলতে আমায় ধমকে গেল এই মর্মে যে এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, আমি যেন নিজের চরকায় তেল দিই। আমি বলে গেলাম যা করার বাড়ি গিয়ে করতে হবে, এখানে এই ব্যবহার চলবে না। মিনিট পাঁচেক চলেছিল ব্যাপারটা। শেষ অব্দি মেয়েটি আমার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে টেনে হিঁচড়ে ইঞ্চি ছয়েক নড়াতে পারল ছেলেটিকে, আমায় চলে আসতে হল। কারণ আমাদের পাশ দিয়ে যেসব সুবেশী, শিক্ষিত তরুণ তরুণী হেঁটে যাচ্ছিলেন তাঁদের কেউ এগিয়ে এসে আমার সাথে গলা মেলালেন না। বরং ফুটপাথের মাঝবয়সী দোকানদার ভয়ে ভয়ে আমায় একটু সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। পাশের মিষ্টির দোকান থেকে এক প্রবীণ তবু এসে দাঁড়িয়েছিলেন। পরে আমায় বললেন “কী দরকার তোমার! এসব কি আর ভদ্র ঘরের ছেলেমেয়ে? কী করতে কী করে দেবে…”
দৃষ্টান্ত বাড়িয়ে কাজ নেই। আসল কথা হচ্ছে মানুষ বদলে গেছে । আমার মা যখন যুবতী আর আমি মায়ের আঙুল ধরে চলা শিশু, সেই সময় আমাকে নিয়ে ট্রেনে বাসে উঠলে বসার জায়গা পেতে অসুবিধা হত না মনে আছে। তরুণরাই সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতেন। আর তাই নিয়ে অন্য তরুণদের অশ্লীল ইঙ্গিত করতেও দেখিনি কখনো। আর আমাদের নবগ্রাম অজ পাড়াগাঁ ছিল তখন। সেখানে প্রকাশ্য রাস্তায় বউকে চড় মারার সাহস কারো ছিল না। অর্থাৎ বুড়োবুড়ি ছুঁড়োছুঁড়ি নির্বিশেষে আমরা পশ্চাৎপদ হয়ে পড়েছি। কেন?
এর এক শব্দে উত্তর বিযুক্তি (alienation)। গত দুই আড়াই দশকে আমাদের শেখানো হয়েছে “শুধু নিজেরটুকু নিয়ে ভাবো।” এর পোশাকি নাম ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ (individualism)। জীবনের সবকিছুর কেন্দ্রেই আমি। আমার সুখ, আমার স্বাচ্ছন্দ্য, আমার ক্লেশ, আমার কষ্ট। বাকি দুনিয়া গোল্লায় যাক। এই মতবাদ সম্বল করেই আমাদের প্রজন্ম বড় হয়েছে, আমাদের বাবা-মায়েরা, মানে সেদিন মেট্রোয় ঐ যুগলকে যারা পিটিয়েছে তাদের পান্ডারা যে প্রজন্মের, বড় করেছেন। এই মতবাদই আমাদের সমাজকে, আমাদের রাজনীতিকে আজ নিয়ন্ত্রণ করছে। গোকুলে বেড়েছে সে, তারপর অনুকূল পরিবেশ পেয়ে এখন রাজত্ব করছে।
খেয়াল করে দেখুন — গত আড়াই দশক আপনি কাগজে পত্রে, সিনেমায়, সিরিয়ালে সর্বত্র এটাই জেনেছেন যে নিজের সমস্যা নিজে মিটিয়ে নেওয়াই হচ্ছে সবচেয়ে ভাল। এবং সেটাই আধুনিক মানুষের ধর্ম। যে কোন রকমের জোটবদ্ধতাই হচ্ছে দুর্বলতার লক্ষণ, সেকেলে মানসিকতার লক্ষণ, অফিস কাছারিতে ফাঁকিবাজির লক্ষণ। এইভাবে আপনাকে ক্রমশ বিযুক্ত করা হয়েছে অন্য মানুষের থেকে। আপনি এখন জানেন আপনি অফিসে একা, ট্রেনে একা, বাসে একা, অনেক ক্ষেত্রে বাড়িতেও একা।
এবার আপনি বলবেন সবাই যদি নিজেকে একা ভাবে তাহলে সেদিনকার মেট্রোর মত গণপিটুনির মানসিকতা তৈরি হচ্ছে কী করে? মানুষ হিংসা প্রদর্শন করার বেলায় ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে কী করে?
ব্যাপারটা খুব সোজা। মানুষ জোট বেঁধেছিল, সমাজবদ্ধ হয়েছিল কারণ শারীরিক, মানসিকভাবে তার একার পক্ষে প্রকৃতির সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকা অসম্ভব। সেই ব্যাপারটা আজও বদলায়নি কারণ মানুষ স্বয়ংসম্পূর্ণ জীব নয়। প্রযুক্তির এত উন্নতি সত্ত্বেও একা একজন মানুষ বাঁচতে পারে না, তাকে অন্য মানুষের উপর নির্ভর করতেই হয়, শারীরিক এবং মানসিক প্রয়োজনে। ফলে যতই কেন ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ শেখাও না, মানুষ বিপদে পড়লে, এমনকি বিপন্ন বোধ করলেই, একজোট হতে চায়।
ঠিক এই কারণেই মানুষ কী কারণে একজোট হচ্ছে সেটা বুঝতে গেলে রাজনীতিটা বোঝা দরকার। সব মানুষই নিজের নিজের রাজনীতি অনুযায়ী একজোট হয়। আর কে কার সাথে জোট বাঁধবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করে তার বিযুক্তি। কে কতটা বিযুক্ত সেটাই ঠিক করে সে তার চারপাশের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে নিজেকে কোন পক্ষ ভাববে।
রাজনীতি মানে শুধু সিপিএম, তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস নয়। এই পোস্টে যাঁরা লাইক দেবেন তাঁরা মনে করেন ছেলেমেয়েদুটোর প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন প্রকাশ্য জায়গায় প্রেমের অভিব্যক্তির অধিকার সকলের আছে, আবার কেউ মনে করেন ছেলেমেয়েদুটো বাড়াবাড়ি করেছিল কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারো নেই। কেউ হয়ত আরো একটু ভিন্নমত তবে মোটের উপর এঁরা সকলেই মনে করেন ওদের মারা অন্যায় হয়েছে। এই ঘটনায় এই মতটাই তাঁদের রাজনীতি।
আবার যারা ছেলেমেয়েদুটোকে ধরে পেটাল আর যারা এখনো তাদের সমর্থন করে যাচ্ছে, তারা মনে করে একটা মেয়ে একটা ছেলেকে প্রকাশ্যে জড়িয়ে ধরা বা চুমু খাওয়া এদেশের সংস্কৃতিবিরোধী বা মোটের উপর অশ্লীল। মারা হয়েছে বেশ হয়েছে। এটাই তাদের রাজনীতি।
এখন মুশকিল হচ্ছে, ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের যুগে আমরা আবার শিখেছি যে সবকিছুর মধ্যে রাজনীতি টেনে আনা উচিৎ নয়। কোন ঘটনার রাজনীতি বুঝতে না চাওয়ার এই যে দীর্ঘদিনের অভ্যাস তৈরি হয়েছে তার ফলে আমরা পক্ষ চিনতে ভুল করি। যেমন যখন চাকরি পাই না, রোজগার হারাই, কষ্টের হকের রোজগারও ফুড়ুৎ করে পকেট থেকে উড়ে যায় তখন বুঝতে পারি না যে আমার শত্রু সেই অর্থনৈতিক নীতি যা উত্তুঙ্গ জিডিপি তৈরি করে অথচ কর্মসংস্থান কমায়। আমি ভাবতে শুরু করি আমার শত্রু তফসিলি জাতি উপজাতির লোকেরা, অথবা বিশেষ একটা ধর্মের লোকেরা। কখনো বা ভাবি মেয়েরা এত বেশি লেখাপড়া শিখছে বলেই যত গন্ডগোল, চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যেও ভিড় বেড়ে যাচ্ছে। আমার বিযুক্তি আমাকে ভেতরে ভেতরে আক্রমণাত্মক করে তোলে আর আমি ঐ কাল্পনিক শত্রুদের সাথে যুদ্ধ করার জন্যে হিসহিস করতে থাকি। আমার সামাজিক, অর্থনৈতিক, যৌন অবস্থান যা-ই হোক আমার চোখে আমিই হয়ে উঠি সবচেয়ে প্রতারিত, বঞ্চিত মানুষটা। অথচ যেহেতু আমি জানি যে আমি একা সেহেতু আমি সদা ভীত।
সুতরাং আমার সামনেই একটা মেয়ের কাপড় ধরে কেউ টানলে আমি না দেখার ভান করি কারণ ঐ মেয়েটা আমার কে? ওর চেয়ে আমি কি কম আক্রান্ত? ওর হয়ে বলতে গিয়ে কেন নিজেকে আরো বিপদে ফেলব? চোখের সামনে কেউ দুর্ঘটনায় মরে গেলেও আমি চোখ বন্ধ করে থাকি কারণ যে মরেছে সে আমার কেউ হয় না। আমার এমনিতেই হাজারটা সঙ্কট। আমার সঙ্কটের চেয়ে অন্য একটা মানুষের মৃত্যুও বড় সঙ্কট হতে পারে না।
তবে আমার চারপাশের সঙ্গে আমার যে প্রতিনিয়ত দ্বন্দ্ব — সেটা কিন্তু মিথ্যে নয়। আমার উপর যে নানাবিধ অন্যায় চাপ তৈরি হচ্ছে সেটা কিন্তু আমার কল্পনা নয়। যদি মিথ্যে হত তাহলে মেট্রোয় ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়ানোর জন্যে মার খেতে হত না। ফলত আমি যে কোন এক পক্ষে আর আমার যে বিপক্ষ আছে তাও সত্যি। আমি নিজের পক্ষের লোক খুঁজছি। একজোট হতে পারলেই আর আমার ভয়ের কারণ থাকে না। তখন গুছিয়ে ঠ্যাঙাতে পারি শত্রুপক্ষকে। কিন্তু আমি কোন পক্ষে আর কোন পক্ষের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই সেটা বুঝব কী করে? চোখের সামনে যাকে বা যাদের দেখছি তারা তো আমারই মত কয়েকজন ব্যক্তি মাত্র, তার বেশিকিছু নয় — এরকমটাই ভাবতে শিখেছি আমি। অতএব আমি সিদ্ধান্ত করলাম যে আমার বয়সী ছেলেমেয়েদের যে বুড়োরা ধরে মারল, তারা শুধুই বুড়ো। কোন বিশেষ মতামতের, মানে রাজনীতির, প্রতিভূ নয়। অর্থাৎ এই লড়াইটায় আমার পক্ষ হল আমার মত তরুণরা আর বিপক্ষ হল বয়স্ক লোকেরা। সেদিন দলে ভারী ছিলাম না তাই মার খেয়েছি। সোশাল মিডিয়ায় আমার পক্ষের অনেককে পেয়ে গেছি অতএব মার ফিরিয়ে দিই যত বয়স্ক লোক আছে সকলকে গালাগালি দিয়ে।
যারা সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে আক্রমণ করেছিল তারাও একইরকম বিযুক্তির শিকার ছিল, যতক্ষণ না সংস্কৃতির শত্রু নামক কাল্পনিক শত্রুর বিরুদ্ধে তারা এক হতে পেরেছে। শুধু এদেশে নয়, সারা পৃথিবীতেই এখন এরকম কাল্পনিক শত্রুর বিরুদ্ধেই মানুষ বিযুক্তি কাটিয়ে এক হতে পারছে, আসল শত্রুরা বহাল তবিয়তে আছে। কলকাতার মেট্রো কোন বিচ্ছিন্ন জায়গা নয়।
তাই বলছি, হোক আলিঙ্গন। বয়স্কদের বিরুদ্ধে তরুণদের আলিঙ্গন নয়, রক্ষণশীলদের বিরুদ্ধে প্রগতিশীলদের আলিঙ্গন। বিযুক্তি কাটুক, মোবাইলের বাইরে এসে সত্যিকারের দুনিয়ায় সংযুক্তি হোক।
পক্ষ নেওয়ার আগে পক্ষ চিনুন।
হোক সংযুক্তি
আপনি বলবেন সবাই যদি নিজেকে একা ভাবে তাহলে সেদিনকার মেট্রোর মত গণপিটুনির মানসিকতা তৈরি হচ্ছে কী করে? মানুষ হিংসা প্রদর্শন করার বেলায় ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে কী করে?